দীপক সুশীল বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়েছিলো একটা মন্দির করার জন্য। বাড়িতে ১০ বছর ধরে দুর্গা পুজা করত তার বাবা। মন্দির তৈরী করতে ইট সিমেন্ট কেনার পর বাড়িতে এসে হামলা চালায় ৪০-৫০ জনের শান্তি বাহিনী । হুমকি দেয় মন্দির বানানোর চেষ্টা করলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। এই হুমকিতে ভয় পেয়ে স্ট্রোক হয়ে মারা যান বাবা সুরেশ চন্দ্র। তার শ্রাদ্ধ করে ফিরে আসার সময় একটি নম্বরপ্লেটহীন পিকআপ ভ্যান পরিকল্পিতভাবে সুরেশ চন্দ্রের ৫ পুত্র ও এক কন্যাকে পিষে দিয়ে হত্যা করে ফেলে। এটি রোড এক্সিডেন্ট নয়, রাস্তার থেকে দুই হাত দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলিকে পিকআপ ভ্যানটি পিষেই শুধু মেরেনি, একজনকে আহত মনে করে ফিরে এসে ফের পিষে দিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে।
এতবড় ধর্মীয় ম্যাসাকার ঘটে গেছে মানবতাবাদীদের কোন সাড়াশব্দ নেই! কারণ যাদের উপর ম্যাসাকার হয়েছে তাদের মাথায় হিজাব ছিলো না। মুখেও ছিলো না সুন্নতী দাড়ি। নামগুলোও আরবী নয়। মিডিয়াও তাই ভাইরাল করেনি। বিবিসি আনন্দবাজারের মত কাগজগুলি যদি ঘটনাটি উল্টো হতো, মসজিদ বানানোর উদ্যোগ নেয়ায় পরিবারের ৫ জনকে হত্যা করা হযেছে- তাহলে তাদের কভারেজে জাতিসংঘের মহাসচিবকে পর্যন্ত এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে হতো। বাংলাদেশের কাগজগুলি সুরেশ চন্দ্রে বাড়িতে হামলাকারীদের পরিচয় দিয়েছে ‘দুর্বৃত্ত’। এরাই সরস্বতী পুজার আগে দেশজুড়ে মূর্তি ভেঙ্গেছে। এরাই গদা ইকবালকে দিয়ে কুরআন মন্দিরে রেখে সারাদেশে হামলা চালিয়েছে। এরাই শ্লোগান দেয় নারায়ে তাকবির আল্লা আকবর। তবু এদের নাম কিছুতে ‘মুসলমান’ বলা যাবে না!
মুসকানের মাথায় কাপড় থাকাটা পৃথিবীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু পাকিস্তানে আর নতুন করে কোন মন্দির গুরু দুয়ার না বানানোর উপর বিল পাশ নিয়ে বিশ্ব মিডিয়াতে ব্লাক আউট। সুরেশ চন্দ্রের পরিবারের উপর এতবড় ধর্মীয় ম্যাসাকার দুদিনেই চাপা পড়ে যাবে কারণ ভারতীয় উপমহাদেশের লিবারাল রাজনীতিতে হিজাবের বাজার আছে সুশীল চন্দ্রের নেই। বাংলাদেশে যদি মন্দির তৈরি হবে আর মূর্তি পুজাই হবে তাহলে কি বা ল ফেলতে দেশ স্বাধীন করছিলাম...। লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ীই যে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয়েছিলো সুশীল চন্দ্রদের প্রতি এই রকম ম্যাসাকার ঘটার পরও ফেইসবুকের কবি মানবতাবাদীদের নিরবতাই বুঝিয়ে দেয়।
No comments:
Post a Comment