মঙ্গলগ্রহে আটকে পড়লেও ফিরিয়ে আনবে..
যা বুঝলাম আমি আসলে ভারত বলে এই দেশটা নিয়ে যাতা রকম obsessed! আমরা obsessed। হবো না কেন বলুন তো? দেশকে আমরা মাতৃভূমি বলি কিন্তু একটা কাঁটাতার দিয়ে নির্ধারিত দেশ যদি রক্ত মাংসের একটা মানুষ, আটপৌরে মায়ের মতোই ব্যবহার করে, তার রাষ্ট্রনীতি ঠিক করে সন্তানদের কথা ভেবে দেশটাকে নিয়ে পাগলামি করব না?
L
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আসন্ন। দেশগুলি পক্ষ নিচ্ছে, অস্ত্র দিচ্ছে, যুদ্ধ যুদ্ধ করছে। এমন একটা সময় যখন বাকি দেশগুলো নিজেদের নাগরিকদের তড়িঘড়ি ইউক্রেন ছেড়ে চলে আসার নিদান দিয়েই দায় সারছে, ভারত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নিজের ছেলেমেয়েদের ঘরে ঘরে ফিরিয়ে আনছে। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকের পর বৈঠক করছে যুদ্ধে জড়িত দুই দেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলে অনুরোধ করছে, যাতে ঘরের ছেলেমেয়েগুলোকে সেফ প্যাসেজ দেওয়া হয়। যুদ্ধ কিছুটা সময় অন্তত বন্ধ রাখা যায়। যাতে ভারতীয়রা ফিরে আসার সুযোগটুকু পায়। রাশিয়া সত্যিই সেফ প্যাসেজ দিল। যুদ্ধ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখলো। ভারতীয়রা বেরিয়ে আসুক। ভারতের ১৩০কোটি মানুষের দাবি। সরকারের দাবি। পক্ষ পরে নেওয়া যাবে, আগে ঘরের ছেলেমেয়েরা ফিরুক।
ভারতীয় বায়ুসেনা নিজের গ্লোবমাস্টার বিমান নিয়ে পৌঁছে গেছে ছেলেমেয়েগুলোকে ফিরিয়ে আনতে। কোন রিস্ক নিচ্ছে না সরকার। যদি মিসাইল হামলা হয় অসামরিক বিমানে। যদি গুলি করে নামানোর চেষ্টা করে কেউ? তারচেয়ে সেনাবাহনীর বিমানে নিরাপদে ফিরুক সন্তানেরা। মায়েরা তো এভাবেই নিজের বাবাই আর সোনাইদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তার আর স্বচ্ছন্ডের কথা ভাবে। দেশ বোধহয় আসলে মায়ের মতোই ভালো।
ওদিকে সমস্ত ছুটি বাতিল করে বিদেশ মন্ত্রকের কর্মচারীরা মহাযুদ্ধে ঘরে ফেরানোর মহাযজ্ঞ শুরু করেছে। যাদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে, তারা কিন্তু কেউ দেশের হয়ে, দেশের কাজে ইউক্রেন যায়নি। ব্যক্তিগত স্তরে স্বেচ্ছায় বিদেশে গেছিল। কিন্তু সুষমা স্বরাজের ওই বিখ্যাত উক্তি আছে না, এক ছাত্র বিদেশে পাসপোর্ট টাকা-পয়সার সব হারিয়ে ফেলেছিল। পাগল পাগল অবস্থা। তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে টুইট করেছিলেন ঘরে ফিরিয়ে আনার আকুতি নিয়ে। ভারতীয় সেই ছেলেটিকে আশ্বস্ত করে সুষমা স্বরাজের একটি উক্তি ছিল। "চিন্তা করো না তুমি ভারতীয় তুমি মঙ্গল গ্রহে আটকে পড়লেও ভারত সরকার তোমাকে তোমার দেশে ফিরিয়ে আনবে।"
হয়তো ঠিক এই কারণেই পাকিস্তানের ছাত্রছাত্রীরা পর্যন্ত ভারতের পতাকা হাতে ইউক্রেন থেকে সেফ প্যাসেজ দিয়ে ফিরে আসছেন। হয়তো ঠিক এই কারণেই বারবার ১৩০ কোটি মানুষ গেয়ে ওঠে, "ভায়ের মায়ের এত স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ।ওমা তোমার চরণ দুটি বক্ষে আমার ধরি।আমার এই দেশেতে জন্ম যেন এই দেশেতে মরি।"
©----- ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ
No comments:
Post a Comment