Monday, 27 December 2021

আমি গান্ধীজিকে কেন বধ করেছি

 "আমি গান্ধীজিকে কেন বধ করেছি"

---নাথুরাম গোডসে



-----------------------------------------------

সুপ্রীম কোর্টের অনুমতি পাওয়ার পর প্রকাশিত হয় মাননীয় নাথুরাম গোডসের ভাষন --- 

আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি । ৬০ বছর এটা নিষিদ্ধ ছিল! 


আমরা সকলেই জানি, ৩০ শে জানুয়ারী, ১৯৪৮ গোডসে গুলি করে গান্ধীজীকে হত্যা করেছিলেন। গুলি করে উনি ঘটনা স্থল থেকে পালিয়ে যান নি! উনি আত্মসমর্পণ করলেন! 


গোডসের সঙ্গে আরও ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হল। মামলা চলাকালীন প্রধান বিচারপতির কাছে অনুরোধ করা হয় যাতে নাথুরাম গোডসে তাঁর বক্তব্য রাখতে পারেন। অনুমতি তো মিলল কিন্তু শর্ত সাপেক্ষ ! 


সরকারের নির্দেশ অনুসারে কোর্টের বাইরে যাওয়া চলবে না। পরে ওনার ছোট ভাই গোপাল গোডসে দীর্ঘদিন মামলা চালানোর পর ---- প্রায় ৬০ বছর পর অনুমতি পাওয়া যায় সর্ব সমক্ষে রাখার। 


১. নাথুরাম ভাবতেন --- গান্ধীজির অহিংসা ও মুসলিম তোষণ নীতি হিন্দুদের কাপুরুষে রূপান্তরিত করে দিচ্ছে। কানপুরে গণেশ শঙ্কর বিদ্যার্থীকে মুসলিমরা নির্মম ভাবে হত্যা করে। আর যে গণেশজী গান্ধীজির ভাব ধারায় প্রভাবিত ছিলেন ---- তাঁর হত্যাকান্ডে গান্ধীজি চুপ রইলেন!


২. ১৯১৯ এর জালিয়ানওয়ালা বাগের হত্যাকান্ডে সমস্ত দেশ আক্রোশে ফুঁসছিল। এই নৃশংস হত্যাকারী খলনায়ক জেনারেল ডায়ারের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য গান্ধীকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি পরিস্কার মানা করে দেন! 


৩.গান্ধী খিলাফত আন্দোলনকে সমর্থন করে ভারতে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বুনলেন! নিজেকে কেবল মুসলিমদের হিতৈষী হিসাবে হাবে-ভাবে বুঝিয়ে দিতেন। কেরালায় মোপলা মুসলিমরা ১৫০০ হিন্দুকে হত্যা ২০০০ হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করল! গান্ধীজি বিরোধিতা পর্যন্ত করলেন না! 


৪. কংগ্রেসের ত্রিপুরা অধিবেশনে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস বিপুল সমর্থনে জয়লাভ করেন। কিন্তু গান্ধীর পছন্দের প্রার্থী ছিল সীতা রামাইয়া! সুভাষ চন্দ্র বোসকে পরে বাধ্য করা হয় ইস্তফা দেওয়ার জন্য। 


৫. ২৩ শে মার্চ, ১৯৩১ --- ভগৎ সিংকে ফাঁসী দেওয়া হয়। সারা দেশ এই ফাঁসী আটাকানোর জন্য গান্ধীকে অনুরোধ করেন। গান্ধী ভগৎ সিং এর কার্যকলাপকে অনুচিত মনে করে এই অনুরোধ রাখেন নি! 


৬. গান্ধীজি কাশ্মীরের রাজা হরি সিংকে পদত্যাগ করতে বলেন --- কারণ কাশ্মীর মুসলিম বহুল রাজ্য! উনি হরি সিংকে কাশী গিয়ে প্রায়শ্চিত্য করতে বলেন! অথচ হায়দ্রাবাদের নিজামের ক্ষেত্রে চুপ। গান্ধীজির নীতি ধর্ম বিশেষে বদলাতো। পরে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের সক্রিয়তায় হায়দ্রাবাদকে ভারতের সঙ্গে রাখা হয়। 


৭. পাকিস্তানে " হিন্দু নিধন যজ্ঞ " চলছে তখন! 

প্রাণ বাঁচাতে বেশ কিছু হিন্দু ভারতে চলে আসে। অস্থায়ী ভাবে আশ্রয় নেয় দিল্লীর মসজিদে। মুসলিমরা এর জন্য বিরোধিতা শুরু করে। ভয়ঙ্কর শীতের রাতে মা-বোন-বালক-বৃদ্ধ সকলকে জোর করে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়া হয়। নীরব রইলেন গান্ধী ! 

 

8. গান্ধী মন্দিরে কোরান পাঠ ও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করলেন! এর বদলে কোন মসজিদে গীতা পাঠের ব্যবস্থা করতে পারলেন না! অসংখ্য হিন্দু, ব্রাহ্মণ এর প্রতিবাদ করেছিল ---- গান্ধী আমলই দিলেন না! 


৮. লাহোর কংগ্রেসে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের জয় হল, কিন্তু গান্ধী জেদ করে এই পদ নেহেরুকে দিলেন। নিজের ইচ্ছা সফল করানোতে উনি সিদ্ধ হস্ত ছিলেন। 

ধর্না, অনশন, রাগ, বাক্যালাপ বন্ধ করা ---- এই কলা গুলির সাহায্যে যখন তখন ব্লাকমেল করতেন। সিদ্ধান্তের ঠিক ভুলও বিচার করতেন না। 


১০. ১৪ ই জুন, ১৯৪৭ দিল্লীতে অখিল ভারতীয় কংগ্রেস সমিতির বৈঠক ছিল। আলোচনার বিষয় ছিল ভারত বিভাজন। এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে দেশ ভাগের প্রস্তাব গান্ধী সমর্থন করলেন। এই ইনিই একদিন বলেছিলেন ---- দেশ ভাগ করতে গেলে ওনার মৃত দেহের ওপর করতে হবে! 

লাখ লাখ হিন্দু মারা গেলেও উনি চুপ থেকেছেন! মুসলিমদের কখনো শান্তি বজায় রাখার আদেশ দেন নি ---- যত আদেশ উপদেশ শুধু হিন্দুদের ওপর! 


১১. ধর্ম নিরপেক্ষতার ছদ্মবেশে "মুসলিম তোষণ" এর জন্ম দেন গান্ধী। যখন হিন্দী ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার বিরোধীতা করল মুসলিমরা ---- স্বীকার করলেন গান্ধী! 

অদ্ভুত এক সমাধান দিলেন --- "হিন্দুস্তানি" (হিন্দী ও' উর্দুর খিচুরি)!  বাদশাহ রাম, বেগম সীতা বলার চল শুরু হল! 


১২. কিছু মুসলমানের বিরোধিতায় মাথা নত করলেন আবার ---- "বন্দে মাতরম" কে জাতীয় সংগীত হতে দিল না ! 


১৩. গান্ধীজি বেশ কয়েকবার ছত্রপতি শিবাজী, মহারাণা প্রতাপ, গুরু গোবিন্দ সিংহকে পথভ্রষ্ট দেশভক্ত বলেছেন! কিন্তু সেখানে মোহাম্মদ আলি জিন্নাহকে "কায়েদে আজম" বলে ডাকতেন! কি অদ্ভুত না! 


১৪. ১৯৩১ এ জাতীয় কংগ্রেস স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকা কেমন হবে  তা নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি তৈরী করে। এই কমিটি সর্ব সম্মতিতে ঠিক করেন --গেরুয়া বস্ত্রের পতাকা হবে যার মাঝখানে চরকা থাকবে। কিন্তু গান্ধীজির জেদে সেটা তেরঙ্গা করতে হয়! সব ওনারই মর্জির ওপর নির্ভর করত!

 

১৫. যখন সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটৈলের উদ্যোগে সোমনাথ মন্দিরের পুননির্মাণের প্রস্তাব সংসদে রাখা হয় ----- তখন উনি বিরোধিতা করলেন! এমনকি উনি মন্ত্রীমন্ডলেও ছিলেন না! কিন্তু অদ্ভুত ভাবে ১৩ ই জানুয়ারী, ১৯৪৮ এ আমরণ অনশন শুরু করলেন --- যাতে সরকারি খরচে দিল্লীর মসজিদ তৈরী হয়! কেন এই দ্বিচারিতা? উনি হিন্দুকে হয়তো ভারতীয় ভাবতেনই না! আচ্ছা উনি আদৌ হিন্দু ছিলেন তো? 


১৬. গান্ধীজির মধ্যস্থতায় ঠিক হয় ---- স্বাধীনতার পর ভারত পাকিস্তানকে ৭৫ কোটি টাকা দেবে। ২০ কোটি শুরুতেই দেওয়া হয়। বাকি ছিল ৫৫ কোটি। কিন্তু ২২ শে অক্টোবর, ১৯৪৭ পাকিস্তান কাশ্মীর আক্রমণ করে! পাকিস্তানের এই বিশ্বাস ঘাতকতার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীমন্ডল সিদ্ধান্ত নেয় বাকী পয়সা আর পাকিস্তানকে দেওয়া হবে না। কিন্তু সেই বেঁকে বসলেন লাঠিধারী! শুরু করলেন আবার ব্লাকমেইল --- আবার অনশন। শেষে সরকার বাকি ৫৫ কোটি টাকাও বিশ্বাসঘাতক পাকিস্তানকে দিতে বাধ্য হল! 


এইরকম জিন্নাহ আর অন্ধ পাকিস্তান প্রীতি দেখে বলতে পারি উনি প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপিতা ছিলেন ---- ভারতের নয়। প্রতিটি মুহুর্তে পাকিস্তানের সমর্থনে কথা বলেছেন -- সে পাকিস্তানের দাবী যতই অন্যায় হোক! 


বিঃদ্রঃ : শেষ পর্বে আদালতে বয়ানের কিছু অংশ বাংলায় অনুবাদ করে পরিবেশিত :


আদালতে দেওয়া নাথুরাম গোডসের কিছু বয়ানের বঙ্গানুবাদ----


" আমি ওনাকে অনেক শ্রদ্ধা করি। কিন্তু কোন দেশভক্তকে দেশ ভাগ ও একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের পক্ষপাতিত্ব করার অনুমতি দিতে পারি না। আমি গান্ধীকে মারিনি ---- বধ করেছি --- বধ। গান্ধীজিকে বধ করা ছাড়া আমার কাছে আর কোন উপায় ছিল না। উনি আমার শত্রু ছিলেন না ---- কিন্তু ওনার সিদ্ধান্ত দেশের বিপদ ডেকে আনছিল। যখন কোন ব্যক্তির কাছে আর কোন রাস্তা থাকে না ---- তখন ঠিক কাজ করার জন্য ভুল রাস্তা নিতে হয়। 


মুসলিম লীগ ও পাকিস্তান নির্মাণে গান্ধীজির সমর্থনই আমাকে বিচলিত করেছে। পাকিস্তানকে ৫৫ কোটি টাকা পাইয়ে দেবার জন্য গান্ধীজি অনশনে বসেন। পাকিস্তানে অত্যাচারের জন্য ভারতে চলে আসা হিন্দুদের দুর্দশা আমাকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। গান্ধীজির মুসলিম লীগের কাছে মাথা নত করার জন্য অখন্ড হিন্দু রাষ্ট্র সম্ভব হয়নি। ছেলের পক্ষে মাকে টুকরো করে ভাগ করতে দেখা আমার অসহনীয় ছিল। নিজ দেশেই যেন বিদেশী হয়ে গেলাম। 


মুসলিম লীগের সমস্ত অন্যায় আব্দার উনি মেনে চলছিলেন। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম ---- ভারত মাতাকে পুনরায় টুকরো হওয়ার হাত থেকে ও দুর্দশার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য আমার গান্ধীজিকে বধ করতেই হবে। আর সেইজন্যই আমি গান্ধীজিকে বধ করেছি। 


আমি জানতাম এর জন্য আমার ফাঁসি হবে এবং 

আমি এর জন্য প্রস্তুত। আর এখানে যদি মাতৃভূমি রক্ষা করা অপরাধ হয় ----- তাহলে এরকম অপরাধ আমি বার বার করব ---- প্রত্যেক বার করব। আর যতক্ষণ না সিন্ধু নদী অখন্ড ভারতের মধ্যে না প্রবাহিত হয় ---- আমার অস্থি ভাসিও না। 


আমার ফাঁসির সময় আমার এক হাতে কেশরীয় পতাকা ও অন্য হাতে অখন্ড ভারতের মানচিত্র যেন থাকে। আমার ফাঁসিতে চড়ার আগে অখন্ড ভারত মাতার জয় বলতে চাই। 


হে ভারত মাতা --- আমার খুব দুঃখ যে আমি কেবল এইটুকুই তোমার সেবা করতে পেরেছি ।"

—নাথুরাম গোডসে


No comments:

Post a Comment